Bangladesh
Dwijen Sharma
"বাংলাদেশী প্রকৃতিবিদ, জীববিজ্ঞানী, বিজ্ঞান লেখক ও বিখ্যাত অনুবাদক। সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রকাশনা সংস্থা প্রগতি প্রকাশনের অনুবাদক হিসেবে তিনি চল্লিশটিরও বেশি বই অনুবাদ করেছেন।"
<div><div>দ্বিজেন শর্মা প্রকৃতিবিদ, জীববিজ্ঞানী, বিজ্ঞান লেখক ও বিখ্যাত অনুবাদক। তাঁর জন্ম ১৯২৯ সালের ২৯ মে সিলেটের বড়লেখায়। তিনি ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত নটরডেম কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন। এছাড়া নটরডেম কলেজের প্রাকৃতিক পরিবেশ গঠনেও তার প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল।</div><div>শৈশবে তিনি পাথারিয়া পাহাড়ের জঙ্গলে অনেক ঘুরে বেড়িয়েছেন, আর সেখান থেকেই হয়তো গাছপালার প্রতি তাঁর অসীম ভালোবাসা জন্মে। ‘কবিরাজ বাড়ি’ বলে বাড়ির বাগানেই অজস্র গাছগাছালি ছিল, তার মাঝে ছিল স্বর্ণচাঁপা, কনকচাঁপা, মধুমালতীসহ নানা রঙবেরঙের ফুল। বসন্ত শেষে বৃষ্টির পর সারা বাড়ি যখন ফুলে ফুলে ভরে উঠতো, দ্বিজেন শর্মা তখন সকালে পূজার ফুল তুলতেন। সে সময়ই মনের অজান্তে দ্বিজেন শর্মাও প্রকৃতির প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন।</div><div>শৈশবেই গ্রামের পাঠশালায় তাঁর হাতেখড়ি। এরপর করিমগঞ্জ পাবলিক হাইস্কুলে লেখাপড়া করেছেন। যদিও মায়ের ইচ্ছে ছিল তিনি বড় হয়ে ডাক্তার হবেন, কিন্তু প্রকৃতিপ্রেম তাঁকে উদ্ভিদবিদ হতে আকৃষ্ট করে। আর তাই কলকাতা সিটি কলেজে স্নাতক ডিগ্রির পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভিদবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর (১৯৫৮) ডিগ্রি লাভ করেন।</div><div>১৯৫৮ সালে বরিশালের ব্রজমোহন কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন দ্বিজেন শর্মা। ১৯৬২ সাল পর্যন্ত সেখানেই কর্মরত ছিলেন। তারপর শিক্ষকতা শুরু করেন ঢাকাস্থ নটরডেম কলেজে। ১৯৭৪ সালে সোভিয়েত প্রকাশনা সংস্থা প্রগতি প্রকাশনের অনুবাদকের চাকরি নিয়ে চলে যান মস্কো। তিনি চল্লিশটিরও বেশি বই অনুবাদ করেছেন। ১৯৯১ সালের এপ্রিল মাসে অনুবাদ বন্ধ করার নির্দেশ পাওয়ার পর রাশিয়ার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সব সম্পর্ক চুকে গিয়েছিল। কিন্তু ১৭ বছরের প্রবাস জীবনকে মন থেকে মুছে ফেলতে পারেননি তিনি।</div><div>বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে পরোক্ষ সংযোগের কারণে কিছুকাল আত্মগোপন, এমনকি কারাবাসও করতে হয়েছিল তাঁর, যাকে তিনি দুর্লভ সৌভাগ্য মনে করেন। ১৯৭০’র জলোচ্ছ্বাসে দুর্গত মানুষের সেবাকার্যে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসের অধিকাংশ সময়ই কাটিয়েছেন বাংলাদেশে।</div><div>১৯৬০ সালে বরিশালে দেবী চক্রবর্তীর সাথে বিবাহ হয়। ড. দেবী শর্মা ঢাকার সেন্ট্রাল উইমেনস কলেজের দর্শনের সাবেক অধ্যাপিকা। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে। </div><div>তিনি ২০১৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ৮৮ বছর বয়সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীতের ভক্ত ছিলেন। আড্ডা, বিশেষ করে তরুণদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করতেন।</div></div>
Age:1929 Category: Essay & Prose Languages:German, French